কিভাবে ভোটার এলাকা স্থানান্তর/ পরিবর্তন করা যায়ঃ
ভোটার এলাকা স্থানান্তর/ পরিবর্তন করার নিয়মঃ
সাধারনত জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা ভোটার আইডি কার্ড করার সময়ই আমাদের ভোটার এলাকা নির্ধারন হয়ে থাকে। যা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত থাকি, আবার অনেকেই অবগত থাকি না। যার কারনে পরবর্তীতে প্রয়োজন হয় ভোটার এলাকা পরিবর্তন কিংবা স্থানান্তরের। সাধারনত বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন কিংবা চাকুরীর বদলী জনিত কারনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা আবশ্যক হয়ে পরে। আমাদের আজকের আলোচনা কিভাবে একদম সহজ উপায়ে নিজে নিজেই ভোটার এলাকা পরিবর্তন কিংবা স্থানান্তরের কাজটি করা যায় সে সম্পর্কে। ভোটার এলাকা স্থানান্তর/ পরিবর্তন।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য প্রথমেই আপনাকে আপনি যে এলাকায় স্থানান্তর হতে চান সে এলাকার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে ফরম ১৩ সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া উক্ত ফরম আপনি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট কিংবা স্থানীয় নির্বাচন কমিশনের সামনের কম্পিউটার কিংবা ফটোকপির দোকানেও পাবেন। অতপর উক্ত ফরম পূরন করে প্রয়োজনীয় কাগজাদি সহ যে এলাকায় স্থানান্তর হবেন সে উপজেলার নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা প্রদান করবেন। অতপর নির্বাচন কমিশন অফিস আপনাকে উক্ত ফরমের নিচের অংশ কেটে ফেরত দিবে। উক্ত অংশটি অবশ্যই আপনাকে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সংরক্ষন করে রাখতে হবে।
আবেদন ফরম ১৩ পূরন করার নিয়মঃ
আবেদনের প্রথমেই প্রাপকের স্থানে যে উপজেলার অধীন ভোটার স্থানান্তর/ পরিবর্তন/ বদলী করতে চান সে উপজেলার নাম ও জেলার নাম লিখতে হবে।
- ১নং কলামে আপনার পূর্ন নাম বাংলায় আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID Card) অনুরুপ করে লিখতে হবে।
- ২নং কলামে আপনার বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID Card) নাম্বার লিখতে হবে।
- ৩ নং কলামে আপনার জন্ম তারিখ লিখতে হবে (NID Card) মত করে।
- ৪ নং কলামে আপনার বর্তমান ভোটার এলাকার তথ্য লিখতে হবে।
- ৫ নং কলামে যে এলাকায় আপনি আপনার ভোটার স্থানান্তর/ পরিবর্তন/ বদলী করতে চান তার তথ্য লিখতে হবে।
- ৬ নং কলামে ৫ নং কলামের ঠিকানা অর্থ্যাৎ আপনার নতুন ঠিকানায় আপনি কতদিন যাবত বসবাস করছেন তার তথ্য দিতে হবে।
- ৭ নং কলামে লিখতে হবে কি কারনে আপনি আপনার ভোটার স্থান পরিবর্তন করতে যান সে তথ্য। ( উদাহরনঃ বাসস্থান পরবর্তন, বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন ইত্যাদি)
- ৮ নং কলামে রয়েছে উক্ত আবেদনের সাথে কি কি কাগজাদি জমা দিতে হবে।
- অতপর আবেদনকারীর স্বাক্ষর বা টিপসহির স্থানে আপনার বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID Card) মত করে স্বাক্ষর অথবা টিপসহি দিতে হবে।
- অতপর সনাক্তকারী একজন ব্যাক্তির তথ্য দিতে হবে। উক্ত কলামে তাহার স্বাক্ষর, নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার ও ঠিকানা লিখতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যানকেই সনাক্তকারী হিসেবে দেওয়াটা নিরাপদ ও উত্তম।
- বাকি অংশটুকু নির্বাচন কমিশন অফিস পূরন করবেন।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন করতে কি কি কাগজ লাগে/ লাগবে/ প্রয়োজনঃ
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদনের সাথে কি কি কাগজ লাগবে তার বিস্তারিত আবেদনের ৮ নং কলামে স্পষ্টভাবে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। তবে যাবতীয় কাগজাদি অবশ্যই আপনি যে এলাকায় স্থানান্তর হতে চাচ্ছেন সে এলাকার হতে হবে।
- ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান, পৌরসভা/ সিটি কর্পোরেশন হলে পৌরসভার মেয়র/ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কিংবা ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা হলে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এক্সিকিউটিভ অফিসারের প্রত্যয়ন পত্র।
- বাড়ীর বিদ্যুৎ বিল/ গ্যাস বিলের কপি। (বাড়ীর যেকোন একজনের নামে হলে হবে)
- বাড়ী ভাড়া রশিদ/ চৌকিদারী কর রশিদ/ পৌরসভা রশিদ। (বাড়ীর যেকোন একজনের নামে/ বাড়ীওয়ালার নামে হলে হবে)
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ( NID Card ) ফটোকপি।
আবেদন জমা দেওয়ার পর আপনার আবেদনের কাজ শুরু হলে আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বারে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। ১ম মেসেজে আপনার কিছু করার দরকার নাই। তবে ২য় মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হবে যে, আপনার আবেদনটি সম্পন্ন হয়েছে নাকি বাতিল হয়েছে। বাতিল হলে কি কি কারনে বাতিল হয়েছে তা উল্ল্যেখ থাকবে। অতপর বাকি কাগজাদি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
আর যদি দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোন মেসেজ না আসে তাহলে নিজেই গিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিসে আপনার স্লিপটি নিয়ে যোগাযোগ করবেন।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন/ স্থানান্তর হয়ে গেলে আপনি পরবর্তী নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে পাবেন। কিন্তু আপনাকে কিন্তু নতুন করে কোন ভোটার আইডি কার্ড কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে না। নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আপনাকে অনলাইনে কিংবা সরাসরি রি ইস্যুর আবেদন করলে আপনাকে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র (ঘওউ) কার্ড প্রদান করা হবে।
খরচঃ ভোটার স্থান/ এলাকা পরিবর্তনের আবেদনে কিংবা কার্যক্রমে কোন টাকা জমা প্রদান কিংবা কোনরুপ কোন খরচ নেই। এটি সম্পূর্ন ফ্রি।
আমাদের লিখাগুলি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্য সবাইকে জানার সুযোগ করে দিবেন। আইন ও গুরুত্বপূর্ন
বিষয়ে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের ব্লগ পেজ, আইনের আশ্রয় ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের সাথে থাকুন।
(বিঃ দ্রঃ) কোন ধরনের কপরিাইট পাইরেসি আমাদের কাম্য নয়। আমাদের দেয়া তথ্য ও প্রতিকার সম্পূর্ন শিক্ষা ও সচেতনতামুলক মাত্র, কেউ ইহাকে আইনগত মতামত বা পরার্মশ রূপে ব্যবহার করলে তাহার দায় সর্স্পূণ ব্যাক্তিক বটে। এ ধরনের কাজে, প্রয়োজনে সরাসরি নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে পরামর্শ গ্রহন করার জন্য সর্তক করা হল)