পৃথীবির ভয়াবহ ও অমানবিক যতসব মৃত্যুদন্ড। ক্ষমতা এক অদ্ভত জিনিস। পৃথীবিতে সবাই ক্ষমতা ভালবাসে। আর মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত কেহই তার ক্ষমতা হারাতে চায় না। তা যেকোন মুল্যেই হোক। তজন্য যদি যুদ্ধও বেধে যায়, যদি লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রানহানিও ঘটে। যদি পুরে ছাড়খার হয়ে যায় সাজানো শহর, উৎসবমুখর নগর তাও আপত্তি নেই। তবুও ক্ষমতা চাই। সাম্রাজ্য চাই। পৃথীবির ইতিহাসে কেহই সেচ্ছায় হাসতে হাসতে ক্ষমতা ছেড়ে দেন নাই। শেষবারের মত তলোয়ার চালিয়েও ক্ষমতাকে আকড়ে ধরতে চেয়েছেন। আর যুদ্ধবন্ধীদের দিয়েছেন পৃথীবির ভয়াবহ ও অমানবিক যতসব মৃত্যুদন্ড।
এ বিষয়ে আমাদের ইউটিউবে ভিডিও দেখুন-
আর এই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে একেকজন শাষক নিয়েছেন একেক রকম ভয়ংকর ও নিষ্ঠুরতম যত পদক্ষেপ। বিদ্রোহীদের দিয়েছেন মৃত্যুদন্ড, যুদ্ধবন্ধীদের দিয়েছেন মারাত্বক সব যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যুদন্ডের শাস্তি।
প্রাচীন ও মধ্যযুগে অপরাধীদের স্বাভাবিক মৃত্যুদন্ডকে অনেক শাষকই সহজ ও স্বাভাবিক বিচার মনে করতেন। মৃত্যুর মাধ্যমে আসলে তাদের একপ্রকার মুক্তি দেওয়া হয়। তাই বেচে থাকতেই তাদের অসহ্য যন্ত্রনা ও কষ্ট দিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের ব্যাবস্থা করা হত। এবং তা অধিকাংশই করা হত প্রকাশ্যে, যেন আর সবার বুক কেপে উঠে। গা শিউরে উঠে। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন অপরাধ কিংবা শাষকের বিরুদ্ধে অবস্থান কিংবা বিদ্রোহ করতে সাহস না পায়।
আমাদের আজকের আলোচনা প্রাচীন ও মধ্যযুগের এইসব ভয়াবহ ও অমানবিক যতসব মৃত্যুদন্ড নিয়ে।
১। কলোম্বিয়ান নেক টাইঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/166609619_470222044296203_3818781251043378869_n.gif)
মধ্যযুগের নিকৃষ্টতম ও অমানবিক সব মৃত্যুদন্ডের মধ্যে নেক টাই পদ্ধতি অন্যতম একটি। কলোম্বিয়ায় ১০ বছর ব্যাপি গৃহযুদ্ধ (La- Violancia) চলাকালে যুদ্ধরত মানুষদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করতে এই পদ্ধতির সূচনা হয়। কলোম্বিয়ান নেকটাই হিসেবে ইতিহাসে এই মৃত্যুদন্ড পরিচিতি লাভ করে। এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ভোতা ছুড়ি দিয়ে অপরাধীর গলা চিরে ফেলা হত। তারপর তার জিহ্বা টেনে গলার এই চিরে ফেলা অংশ দিয়ে বের করে আনা হত। বাইরে থেকে মনে হত গলায় টাই ঝুলছে। এমতাবস্থায় অপরাধী শ্বাসরোধ ও ক্রমাগত রক্তক্ষরনে ধীরে ধীরে মারা যেত। এবং লোকদের ভয় জাগাতে মৃতদেহটি লোকসম্মুখে ফেলে রাখা হত।
২। চামড়া ছাড়ানো বা ফ্লাইংঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/118597478_606567416688469_9076498455408706355_n.jpg)
মধ্যযুগে ইউরোপে এরুপ শাস্তির প্রচলন ছিল। সাধারনত বিশ্বাস ঘাতকদের এরুপ শাস্তি দেওয়া হত। জীবন্ত মানুষের শরীরের চামড়া চাড়ানোর এই পদ্ধতিকে বলা হত ফ্লাইং। এরপর জীবন্ত অবস্থায় অপরাধীকে এভাবে ফেলে রাখা হত। ধীরে ধীরে রক্তক্ষরনে ও শরীরের সকল ফ্লুইড বেরিয়ে ধীরে ধীরে যন্ত্রনা ভোগ করতে করতে অপরাধীর মৃত্যু হত। এভাবে অপরাধীর মৃত্যু হতে কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিনও লেগে যেত। কখনো কখনো যন্ত্রনাকে আরও তীব্রতর করতে শরীলে লবন লাগানো হত। একবার ভাবুন তো কতটা ভয়াবহ ও নিশংস ছিল সে মৃত্যুদন্ড।
৩। ব্লাড ঈগলঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/171704437_303467804624321_152630487302279941_n.jpg)
নর্ডিক উপাখ্যানগুলির মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম অত্যাচার ছিল এই ব্লাড ইগল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে ২ হাত বেধে ঝুলানো হত। তারপর পিছন থেকে ছুড়ি দিয়ে কেটে ফেলা হত। তারপর পাজরের হাড়গুলিকে আলাদা করে দুইদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হত। এতে করে অপরাধীকে পাখা মেলা ঈগলের মত দেখাত। এখানেই শেষ নয়। খুব সাবধানে তার ফুসফুস ও হৃদপিন্ড বাইরে বের করে আনা হত। এতে করে অপরাধী মারাত্বক অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে ধীরে ধীরে মারা যেত। মৃত্যু যন্ত্রনা আরও বাড়িয়ে দিতে সেখানে লবনও ছিটানো হত। পৃথীবির ভয়াবহ ও অমানবিক যতসব মৃত্যুদন্ড এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম পদ্ধতি।
৪। ইদুরের মরন খেলাঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/171485068_447388713002060_1419143892312375866_n.jpg)
ইতিহাসের আরেকটি নিষ্টুরতম নির্যাতন পদ্ধতির নাম হল ইদুরের মরন খেলা। এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে চিত করওে শুইয়ে হাত পা বাধা হত। তারপর একটি পাত্রে কিংবা খাচায় বড় সাইজের কিছু ইদুর রাখা হত। তারপর পাত্রটি কিংবা খাচার মুখের দিকের অংশটি উপুর করে অপরাধীর পেটে বেধে দেওয়া হত। ইদুরগুলো ছাড়া পেতে ছুটাছুটি শুরু করত। ও খোলা অংশ দিয়ে অপরাধীর নরম পেটে কামরাতে থাকত। জল্লাদেরা ইদুরগুলোর ছোটাছুটি আরও বাড়িয়ে দিতে বালতি কিংবা পাত্রের উল্টাপাশে আগুন জ¦ালিয়ে দিত। অস্থির হয়ে ইদুরগুলো একসময় অপরাধীর পেট চিরে নারী ভুড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে অপরপ্রান্ত দিয়ে বের হতো আর ভয়ানক মরন যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে অপরাধীর মৃত্যু হত। কতটা ভয়ংকর ছিল সে মৃত্যুদন্ড একবার ভাবুনতো।
৫। করাত দিয়ে দ্বিখন্ডিত করাঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/173286689_221025403155572_7856424796165670161_n.jpg)
ইতিহাসের আরেকটি নৃশংশ মৃত্যুদন্ড হল করাত দিয়ে মাঝ বরাবর দ্বিখন্ডিত করা। প্রাচীন ইউরোপে ও এশিয়ার কিছু অঞ্চলে এরুপ মৃত্যুদন্ড প্রচলন ছিল। এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে উল্টো করে দুপায়ে বেধে দুদিকে বাধা হত। তারপর লম্বা করাত দিয়ে অপরাধীর পায়ুপথ বরাবর চিরে ফেলা হত। অনেক সময় মাঝামাঝি কেটে রেখে দেওয়া হত। উল্টো করে ঝুলানোর কারনে মাথায় রক্ত সঞ্চালন হওয়ায় অপরাধী অনেকক্ষন বেচে থাকত। এভাবে একসময় প্রচন্ড মৃত্যুযন্ত্রনা নিয়ে অপরাধী মারা যেত।
৬। শুলবিদ্ধ করাঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/172612527_768292373840258_3627432722728320001_n.jpg)
এই পদ্ধতিতে অপরাধী কিংবা বন্দীকে বিবস্ত্র করে একটি লম্বা, তীক্ষ্ণ, সূচালো লোহার দন্ড তার মলদ্বারে ঢুকিয়ে দিয়ে লোহার দন্ডটি খাড়া করে দেওয়া হত। এতে করে অপরাধী বা বন্দীর নিজের শরীরের ওজনেই অল্প অল্প করে লোহার দন্ডটি শরীরে ঢুকে বুক, মাথা, মুখ, বা পিঠ দিয়ে বের হয়ে আসত। এবং এভাবেই তাকে প্রকাশ্যে ২/৩ দিন ঝুলিয়ে রাখা হত। ধীরে ধীরে প্রচন্ড মৃত্যুযন্ত্রনা নিয়ে একসময় অপরাধী বা বন্দীর মৃত্যু হত। রোমানিয়ার ভ্লগ দি ইম্পেলার ১৫ তম শতাব্দীর শাষনামলে এই নিষ্ঠুরতম মৃত্যু দন্ডাদেশ কুখ্যাতি লাভ করে।
৭। ঘোড়ায় টেনে ৪ টুকরো করাঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/173288589_233148278546175_863436388709240541_n.jpg)
১৩৫২ সালে ইংল্যান্ডের উচ্চ আদালতে আসামীদের মৃত্যুদন্ড হিসেবে এইরুপ শাস্তিপদ্ধতি ছিল। যদিও (১২১৬-১২৭২) সালে রাজা তৃতীয় হেনরী সর্বপ্রথম এমন নির্মম রীতিটি চালু করেছিলেন বলে জানা যায়।
এই পদ্ধতিতে অপরাধীর ৪ হাত পা চারটি ঘোড়ার সাথে বাধা হত। তারপর জল্লাদরা ঘোড়াগুলোকে সামনের দিকে তেড়ে যেতে বাধ্য করত। অতপর অপরাধী প্রচন্ড টানে ছিড়ে ৪ টুকরো হয়ে যেত। এভাবে ব্যার্থ হলে ভোতা অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে অপরাধীর হাত পা আলাদা করা হত। যাতে যন্ত্রনার পরিমান বেশী হয়। এরপর শরীর থেকে পেট কেটে নাড়ীভুড়ি বের করে অপরাধীর সামনেই আগুনে ঝলঝানো হতো। তারপর মাথাটাকে ফাসীতে ঝুলানো হত। এভাবে নিষ্ঠুরভাবে অপরাধী বা বন্দীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হত।
৮। হাতি দিয়ে মাথা পিষ্ট করাঃ
![আইনের আশ্রয়](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/169257070_1188956771555127_2997672389906402123_n.gif)
দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় এক সময় মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার জন্য এই নিষ্ঠুর পদ্ধতির প্রচলন ছিল। এই পদ্ধতিতে অপরাধী বা বন্দীকে হাত পা বেধে বিশালাকার হাতির সামনে এনে রাখা হত। বিশাল আকৃতির হাতি পা দ্বারা অপরাধীর মাথা সজোড়ে থেতলে দিত। কিছু কিছু হাতিকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষনও দেওয়া হত। যেন আস্তে আস্তে মাথা থেতলে যন্ত্রনা দিতে দিতে মারা হয়। তারপর যখন অপরাধী প্রচন্ড যন্ত্রনায় ও ভয়ে চিতকার করতে থাকত তখন হাতিটি তার পায়ের নিচে থাকা মাথাটি এক চাপে পিষ্ট করে দিত।
৯। সিমেন্টের জুতাঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/167622677_2112852115518923_4820344669802142352_n.gif)
আমেরিকান মাফিয়াদের কাছে এ নিষ্ঠুর পদ্ধতিটি অনেক পছন্দের ছিল। তারা কোন শত্রæ বা গুপ্তচরকে শাস্তি দিতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করত। এই পদ্ধতিতে অপরাধীর পা হতে গোড়ালীর উপর পর্যন্ত একটি চারকোনা ব্লকে রেখে ব্লকটি সিমেন্টের মিশ্রন দ্বারা ভর্তি করে দিত। তারপর সিমেন্ট শুকিয়ে গেলে তা অপরাধীর পায়ের সঙ্গে আটকে যেত। তারপর তাকে কোন নদী বা গভীর জলাশয়ে ফেলে দিত। ওজনের কারনে লোকটি দ্রুত ডুবে যেত ও প্রানপন হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে করতে এক সময় মারা যেত।
১০। ড্রাম এবং স্ক্যাফিজমঃ
ড্রাম এবং স্ক্যাফিজম
ড্রাম বা ব্যারেল এর পচলন ছিল রোম স¤্রাট ডোমিশিযান এর শাষনামলে আর স্ক্যাফিজম (ঝপধঢ়যরংস) এর উৎপত্তি প্রাচীন পারস্যে। নানান রকম নির্যাতনের মধ্যে অন্যতম ছিল এই পদ্ধতি দুইটি। এই পদ্ধতিতে অপরাধী বা বন্দীকে একটি ড্রাম বা ব্যারেলের মধ্যে ভরে হাত পা গুলি বাহিরে রাখা হত। আর অপরাধীকে প্রচুর পরিমান দুধ ও মধু খাওয়ানো হত। এত বেশী পরিমানে খাওয়ানো হতো যে, অপরাধীর ডায়রিয়া হয়ে যেত এবং ড্রামের মধ্যেই মল ত্যাগ করতে করতে ড্রাম ভর্তি হয়ে যেত। এভাবে তাকে ফেলে রাখা হত। রোগ জীবানুতে তার শরীরে পচন ধরে যেত।
ড্রামের বাহিরে থাকা অংগ গুলোতে মধু আর দুখ মাখিয়ে দেওয়া হতো। এতে করে পোকামাকড়ে সংক্রমন হতে হতে মাংষে পচন ধরত। স্ক্যাফিজম পদ্ধতিটাও একই রকম। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র ড্রামের পরিবর্তে গাছের গুড়ি বা কাঠের নৌকা ব্যাবহার করা হত। তারপর শরীরের নাজুক অংশগুলোতে মেখে দেওয়া হতো দুধ আর মধু। এবং দীর্ঘদিন এভাবে ফেলে রাখা হলে অপরাধীর শরীরে পচন ধরত ও পোকা মাকড় বাসা বাধত। এভাবে ভুগতে ভুগতে ১০-১৫ দিনে তীব্র যন্ত্রনা নিয়ে অপরাধী মারা যেত।
১১। চাকার র্যাকঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/171989891_546140749687820_3152507919932351848_n.png)
মধ্যযুগের নির্মম সব মৃত্যুদন্ডের মধ্যে এই পদ্ধতিটি ছিল অন্যতম ভয়ানক। এই পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হত একটি চারকোনা টেবিল। যার মাথা ও পায়ের কাছে দুুটি দন্ড চাকার সাহায্যে লাগানো থাকত। দুইটি দন্ডেই দুইটি করে মোট চারটি দন্ড থাকত। অপরাধীকে সেখানে রেখে ৪টি দড়ি দ্বারা হাত পা বাধা হত। তারপর শুরু হত চাকা ঘুড়ানো। তারপর প্রচন্ড টানে অপরাধীর হাত পা শরীর হতে আলাদা হয়ে যেত। অনেক সময় শরীরের মাঝ ববাবর ছিড়ে দুুইভাগ হয়ে যেত। প্রচন্ড মৃত্যু যন্ত্রনা নিয়ে অপরাধী এক সময় মারা যেত।
১২। বাশের ব্যাবহারঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/172147436_275075657580812_5542052477561496773_n.jpg)
বাশ হচ্ছে দ্রুত বর্ধনশীল একটি ঘাষজাতীয় উদ্ভিদ। কিছু জাতের বাশ প্রতিদিন (২০-৪০) ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়ে। এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে হাত পা বেধে ছোট ছোট কিছু বাশ চারার উপর শুইয়ে দেওয়া হত। দুই তিন দিনের মধ্যেই চারা গুলো বড় হয়ে অপরাধীর বুক পেট চিড়ে বের হয়ে যেত। অমানুষিক মৃত্যুযন্ত্রনা আর রক্তক্ষরনে অপরাধীর মৃত্যু হত।
১৩। ফুটন্ত তেল বা পানিঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/171744154_611624679794253_8436512522261736784_n.jpg)
প্রাচীন চীনে এই অমানুষিক মৃত্যুদন্ড পদ্ধতির প্রচলন হয়। এই পদ্ধতিতে একটি বড় পাত্রে পানি কিংবা তেল কিংবা মোম গরম করা হত। তারপর অপরাধীকে ধরে অল্প অল্প কওে ফুটন্ত তেল বা পানিতে ফেলা হতো। এতে করে অপরাধীর সারা শরীরের সকল মাংশ সেদ্ধ হয়ে খষে যেত। চীনে এই পদ্ধতির প্রচলন হলেও ধীরে ধীরে তা জাপান, ফিজি এবং যুক্তরাজ্যেও ১৫০০ শতক পর্যন্ত এর প্রচলন ছিল। যদিও ইতিহাসের কিছু দলিল এই প্রকার অমানুষিক নিশংস মৃত্যুদন্ড পদ্ধতি অ¯^ীকার করে।
১৪। লিংচি বা স্লো স্লাইজিংঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/172292185_1206386263148593_4531461542029000608_n-1.jpg)
অপরাধীকে ধীরে ধীরে অসহ্য যন্ত্রনা দিয়ে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার আরেক ভয়ংকর পদ্ধতির নাম স্লো স্লাইজিং । এই পদ্ধতির প্রচলন হয় চীনে। এই পদ্ধতিতে জল্লাদগন শরীরের বিভিন্ন অংশ হতে অল্প অল্প করে মাংশ কেটে নিত। শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন হাতের আংগুল, পায়ের আংগুল, লিঙ্গ, কান, চোখ ইত্যাদি কেটে নেওয়া হত। এই পদ্ধতির মুল উদ্দেশ্য ছিল ধীরে ধীরে মারাত্বক যন্ত্রনা দিয়ে মৃত্যু ঘটানো। মাংশ কাটা হয়ে গেলে অপরাধীর হৃদপিন্ডে সজোড়ে ছুড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হত। অসহ্য মৃত্যু যন্ত্রনা নিয়ে অপরাধী মৃত্যবরন করত। ¯েøা ডেথ নামে পরিচিত এই মৃত্যুদন্ড অবশেষে বিংশ শতাব্দীতে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়।
১৫। ব্রাজেন বুল বা বোঞ্জের ষাড়ঃ
![](https://ainerasroy.com/wp-content/uploads/2021/04/172246991_942484046579268_3858645627599677427_n.jpg)
নির্যাতন পদ্ধতির আরেক ভয়ংকর পদ্ধতির নাম হল ব্রোঞ্জের ষাড় বা ব্রাজেন বুল। সিসিলির শাষক ফালারিস (চযধষধৎরং) এর শাষনামলে এই পদ্ধতির প্রচলন হয়।
এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে একটি ব্রোঞ্জের তৈরি ষাড়ের মধ্যে ঢুকানো হত। তারপর তার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হত। তারপর বুলের নিচে ৭০০ ডিগ্রি তাপমাত্রার আগুন জ¦ালানো হত। প্রচন্ড আগুনে ষাড়টি লাল বর্ন ধারন করত। ভিতরে থাকা অপরাধী সেখানে ঝলষে যেত। আর প্রচন্ড চিতকার করত। তার চিতকার ষাড়ের মুখে লাগানো পাইপ দিয়ে বের হয়ে ষাড়ের গর্জনের মত শোনাত। আর নাকের ফাকা অংশ দিয়ে পোড়া গন্ধ বের হয়ে আসত। কথিত আছে শাসক ফালারিস যখন ক্ষমতাচ্যুত হন তখন তাকেও একই ভাবে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল। একবার ভাবুন তো কতটা ভয়ংকর ছিল সে মৃত্যুদন্ড।
ইতিহাসে আরও এমন অসংখ্য নিশংস ও ভয়াবহ মৃত্যুদন্ড রয়েছে। যেগুলোর প্রবর্তন হয়েছিল শুধুমাত্র অত্যাচার, শোষন, নিপীরন ও শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার নেশায়।
অমানুষিক অত্যাচারের এসব মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাহত প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে যেন অন্য কেউ ভয়ে একই অপরাধ না করে। কিংবা শাষকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করে। সভ্যতার এই যুগে এসে এসব মৃত্যুদন্ডের কথা শুনলে গা শিউরে উঠে। নিজেকে অন্তত সৌভাগ্যবান মনে হয়, অসভ্যতা ও বর্বরতার অভিষপ্ত সে সময়ে জন্ম হয়নি বলে।
আমাদের আয়োজনগুলি ভালো লাগলে আমাদের ফেসবুক পেজ আইনের আশ্রয় ও আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবসক্রাইব করে ও বেল আইকনটি চেপে রাখুন ও লাইক কমেন্ট ও শেয়ার দিয়ে পাশে থাকুন।
আমাদের আরও ব্লগ দেখতে আমাদের ব্লগ পেজে ভিজিট করুন।