ব্যারিস্টার ও আইনজীবি/ এডভোকেট/ উকিলের মধ্যে পার্থক্য অনেকের মনেই প্রশ্নের সৃষ্টি করে। শাব্দিক অর্থে উকিল বা এডভোকেট অর্থ অপরের প্রতিনিধি বা কারোও পক্ষে বিচারকার্যে প্রতিনিধিত্ব করা। এবং ব্যারিস্টার অর্থ পরামর্শদাতা। তবে দুজনের কাজ একই। কোন ব্যাক্তিকে আইনি সহযোগিতা প্রদান করা।
জায়গা বা দেশভেদ আইনজ্ঞদের ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন কেউ যদি লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করে বিপিটিসি ( বার প্রফেসনাল ট্রেনিং সার্টিফিকেট) অর্জন করেন তাহলে তিনি ব্যারিস্টার হিসেবে আখ্যায়িত হবেন ও সেখানে আইন পেশা চালিয়ে যেতে পারবেন। আবার এই ব্যারিস্টারগনেরও মধ্যে শ্রেনীপ্রকার রয়েছে। যেমন যুক্তরাজ্য ৪ টি রাজ্যে বিভক্ত। যেমন, ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ড। এর মধ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস এ আইনপেশা আবার দুইভাগে বিভক্ত। ১। সলিসিটর ২। ব্যারিস্টার।
ব্যারিস্টারঃ
যারা যুক্তরাজ্যের আদালতে প্রাকটিশ বা আইনপেশা পরিচালনা করবে, মামলায় প্রতিদন্ধিতা করবে বা মামলা বা কোর্ট বিষয়ে পরামর্শ দিবেন তারা ব্যারিস্টার। অপরদিকে,
সলিসিটরঃ
যারা কোর্ট প্রাকটিশের সাথে সম্পৃক্ত না থেকে আইন বিষয়ে অন্যন্য দিকগুলিতে আইনি সহায়তা বা পরামর্শ প্রদান করবেন তারা সলিসিটির হিসেবে আখ্যায়িত হবেন। তবে মর্যাদায় উভয়ের স্থান একই।
আইনজীবি/ এডভোকেট/ উকিলঃ
আবার কেউ যদি বাংলাদেশ হতে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত এডভোকেটশীপ পরীক্ষায় ৩ টি ধাপে (এমসিকিউ, লিখিত, ভাইবা) উত্তীর্ন হন এবং আইন পেশার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত হন তাহলে তিনি এ্যাডভোকেট, আইনজীবি, উকিল হিসেবে আখ্যায়িত হবেন।
আরোও জানুনঃ
মামলা থাকলে সরকারী চাকুরী হবে কি?
মামলায় কিভাবে সাজা বা খালাষ হয়?
কোম্পানী গঠনের খরচ ও সহজ নিয়ম
চেক ডিজঅনার মামলা হলে করনীয় কি? কিভাবে পাবেন প্রতিকার
সুতরাং ব্যারিস্টার ও আইনজীবি/ এডভোকেট/ উকিলের মধ্যে পার্থক্য শুধুমাত্র দেশ ও স্থান ছাড়া কিছুই নয়। কেউ যদি বাংলাদেশে আইনপেশা বা কারোও পক্ষে ওকালতি করতে চান তাহলে তিনি ব্যারিস্টার হওয়া সত্বেও অবশ্যই তাকে বাংলাদেশের আইন কানুন পুনরায় পড়ে, নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে, বাংলাদেশের আইনের ছাত্রদের মত একইভাবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অধীনে এডভোকেটশীপ পরীক্ষায় ৩ টি ধাপে (এমসিকিউ, লিখিত, ভাইবা) উত্তীর্ন হয়ে তারপর এ্যাডভোকেট হতে হবে। অন্যথায় ব্যারিস্টার হলেও বাংলাদেশে তিনি আইনপেশা বা ওকালতি করতে পারবেন না। কারন ইংল্যান্ডের আইন কানুন এবং মামলার পরিচালনা পদ্ধতি এবং বালাদেশের আইন কানুন ও মামলা পরিচালনা পদ্ধতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে এমন অনেক ব্যারিস্টার রয়েছেন যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে এডভোকেট হতে পারেন নাই। সুতরাং তিনি এডভোকেট নন। কারন প্রত্যেকটি দেশেরই নিজস্ব স্বকীয়তা বা নিজস্ব আইন রয়েছে।
সুতরাং ব্যারিস্টার ও আইনজীবি/ এডভোকেট/ উকিলের মধ্যে পার্থক্য করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যারিস্টার বা সলিসিটর নামে পদ বা পেশা নেই। আছে শুধু এ্যাডভোকেট বা আইনজীবি। তিনি যেই হন। তাকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হতে হবে।
এবং জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রেও প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। একজন আইনজীবির কর্মদক্ষতা ও সফলতা নির্ভর করে তার অধ্যাবসায় ও আইন বিষয়ে জ্ঞানের পরিধির উপরে। পরিশেষে সকলের একটাই গ্রহনযোগ্য পরিচিতি, তিনি বিজ্ঞ এডভোকেট।
বিঃদ্রঃ আমাদের আলোচনাগুলি শুধুমাত্র জ্ঞান ও জানার জন্য। কেউ যদি আমাদের তথ্যগুলি আপনার কোনো প্রয়োজনীয় কাজে ব্যাবহার করেন তার দায় আপনার একান্তই নিজের। প্রয়োজনে আরোও কোন বিজ্ঞ আইনজীবির সহিত পরামর্শের পরামর্শ প্রদান করা হলো।
আমাদের আয়োজন গুলি ভালো লাগলে ও আরোও লিখা পড়তে আমাদের ব্লগ পেজে চোখ রাখুন, ইউটিউব আইনের আশ্রয় এর সাথে থাকুন এবং কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট, কিংবা ওয়েবসাইটের মেসেজ অপসন কিংবা ফেসবুক পেজ আইনের আশ্রয়ে মেসেজ করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
আরোও জানুনঃ
২০২২-২০২৩ বাজেট এ কোন মন্ত্রনালয় কত বরাদ্দ পাচ্ছে
পারিবারিক নারী নির্যাতনে কি কি মামলা করা যায়
মামলা থাকলে সরকারী চাকুরী হবে কি?
মামলায় কিভাবে সাজা বা খালাষ হয়?
কোম্পানী গঠনের খরচ ও সহজ নিয়ম
চেক ডিজঅনার মামলা হলে করনীয় কি? কিভাবে পাবেন প্রতিকার