প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী গঠন ও নিবন্ধন পদ্ধতি ও খরচ

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী গঠন ও নিবন্ধন পদ্ধতি ও খরচ

Table of Contents

ব্যাবসার পূর্নাঙ্গতা প্রদানের জন্য ভাবছেন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী গঠন করবেন ও নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশন করবেন। তাহলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নিবন্ধনে আপনাকে আগেই ভাবতে হবে কিছু বিষয়। যেমন
১। ব্যাবসা সম্পর্কে আপনার জ্ঞান কতটুকু?
২। যে ব্যাবসা করতে চান তার বর্তমান প্রেক্ষাপটঃ
আপনি যে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন বা কোম্পানী প্রতিষ্টা করতে চাচ্ছেন তার বর্তমান অবস্থা।
৩। কত টাকা মুলধন নিয়ে ব্যাবসা শুরু করতে চান?
৪। অদূঢ় ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসা ও মুলধনকে কোন অবস্থায় দেখতে চান।
৫। আপনার উক্ত ব্যাবসা পরিকল্পনা নিয়ে আপনার স্বপ্নের পরিধি কতটুকু বিস্তর ও আপনি কতটুকু আত্ববিশ্বাসী।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নিবন্ধনে কি কি তথ্য ও ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

১। ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট।
২। টিন/ ট্যাক্স আইডিন্টিফিকেশন নাম্বার।
৩। স্থায়ী ঠিকানা।
৪। বর্তমান ঠিকানা।
৫। পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
৬। পেশা।
৭। মোবাইল নাম্বার।
৮। ইমেইল এড্রেস।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নিবন্ধনে আপনার খরচঃ

কোম্পানী নিবন্ধনের খরচগুলো আসলে কয়েকটি ধাপে বিভক্ত। “আইনের আশ্রয়” সামগ্রিক খরচ সমূহ কে একত্রিত করে একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। যা পাঠকদের সুবিধার জন্য নিচে দেওয়া হলো।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী গঠন ও নিবন্ধন পদ্ধতি ও খরচের হিসাব, www.ainerasroy.com


আইনজীবির সহযোগিতাঃ

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী বা কোম্পানী নিবন্ধনে কোন আইনজীবির সরনাপন্ন হতে হবে ব্যাপারটি এমন নয়। চাইলে আপনি নিজে নিজেই সকল পদ্ধতি অনুসরন করে নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশন করতে পারেন। তবে আপনি যদি নির্ভেজাল কিংবা অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে কাজটি করাতে চান সেক্ষেত্রে কোন আইনজীবি কিংবা ল ফার্মের সহযোগিতা নিতে পারেন।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নিবন্ধনের ধাপসমূহঃ

১। নামের ছাড়পত্র গ্রহন/ নেম ক্লিয়ারেন্স (NC)ঃ

নামের ছাড়পত্র গ্রহন (Name Clearance) কোম্পানী নিবন্ধনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ও প্রথম ধাপ। একটি কোম্পানীর নাম অবশ্যই একক ও ইউনিক হতে হবে। পূর্বে নিবন্ধিত কোন নাম বা তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন কোন নাম কোনভাবেই ছাড়পত্র পাবেন না ও নিবন্ধিতও হবে না। তাই আপনাকে প্রথমেই আপনার পছন্দের নামটি খালি আছে কিনা বা ইতেপূর্বে নিবন্ধিত হয়েছে কিনা সেটি খুজে দেখতে হবে।

নামের ছাড়পত্র গ্রহন/ নেম ক্লিয়ারেন্সের জন্য আপনাকে যা করতে হবেঃ

প্রথমেই রেজিষ্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্রম (আরজেএসসি) এর এই লিংকটিতে গিয়ে আপনার কাঙ্খিত নামটি খুজে দেখুন যে খালি আছে কিনা। অতপর খালি থাকলে পরবর্তী কার্যাদির জন্য এগিয়ে যান। বারতি সতর্কতা হিসেবে নিজে যাচাই করে দেখতে পারেন প্রচলিত বা সুনামধন্য বা দীর্ঘদিন ব্যাবসারত কোন প্রতিষ্ঠান এই নামে রয়েছে কিনা। যদি দেখুন যে, নামটি খালি রয়েছে সেক্ষেত্রে নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করুন।

ইউজার একাউন্ট তৈরিঃ

প্রথম ধাপ হিসেবে এই লিংকটিতে গিয়ে Create New User (General) এ গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে ফর্মটি পূরন করুন। এবং ইউজার একাউন্ট তৈরি করুন।

নেম ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদনঃ

এ পর্যায়ে নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে।


নিবন্ধন সম্পন্ন হলে আপনাকে একটি ইমেইল প্রদান করা হবে। এবং ইমেইলে গিয়ে ভেরিভাই করে কিভাবে লগইন করবেন সে নির্দেশনা দেওয়া থাকবে।


ইমেইল ভেরিফাই করার পর এই লিংকটিতে গিয়ে Apply for Name Clearance ক্লিক করে সেখানে লগইন করতে হবে।


অতপর সেখানে গিয়ে একটি ফর্ম পাবেন। অতপর সর্তকতার সাথে সকল তথ্যাদি যেমন আপনি কোন নাম, কোন অফিস, কিসের জন্য আবেদন করছেন এবং কি হিসেবে আবেদন করছেন সে তথ্যাদি পূরন করে Next এ ক্লিক করলে Submission Details Information চলে আসবে। সেখানে যাচাই করে ঈড়হঃরহঁব তে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনাকে একটি Acknowledgement দেখাবে। এটি অবশ্যই সংরক্ষন করে রাখবেন।


অতপর আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি কোন ব্যাংকে টাকা জমা দিতে চান। সিলেক্ট করলে আপনি একটি টাকা জমার রশিদ প্রদান করা হবে। রশিদ পাবার পর ব্যাংকে আপনাকে ২৩০/- জমা দিতে হবে।


টাকা জমা প্রদানের ২/৩ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনার নামের ছাড়পত্রটি পেয়ে যাবেন। অতপর আপনি আপনার ছাড়পত্রটি প্রস্তুত হয়েছে কিনা সেটি দেখার জন্য Submission Status এ গিয়ে আপনার এ প্রদত্ত নাম্বারটি প্রদান করে চেক করতে পারবেন।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নিবন্ধনের জন্য আবেদনঃ

নামের ছাড়পত্র পাওয়া হয়ে গেলে আপনাকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। ৩০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলে আপনাকে পুনরায় নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে।


নিবন্ধনের জন্য এপর্যায়ে আপনাকে এই লিংকে গিয়ে Apply for Registration এ ক্লিক করতে হবে। অতপর পরবর্তী অপশন থেকে Entity Type Private Company অপশন ক্লিক করতে হবে।


অতপর আপনার সাবমিশন নাম্বার এবং নামের ছাড়পত্রের সঙ্গে পাওয়া নেম ক্লিয়ারেন্স লেটার নাম্বার প্রদান করে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া করতে আরোও যে সকল কাগজাদি লাগবে তা হলোঃ

–মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন।
–আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন।
–ফর্ম IX ঃ উক্ত ফর্মে উল্ল্যেখ থাকে কোন অংশীদারের কত অংশ থাকবে এবং কার কি দায়িত্ব থাকবে।
অতপর চাহিত সকল ডকুমেন্টস সহি স্বাক্ষর করে স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

টাকা জমার মেয়াদঃ

সফলভাবে রেজিঃ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফি জমা প্রদান করতে হবে।
এবং যথাযথভাবে সফলভাবে রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া ও টাকা জমা প্রদান করার পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে আপনার কোম্পানীটি নিবন্ধিত হয়ে যাবে।

যেসকল ডকুমেন্ট আপনাকে প্রদান করা হবেঃ

যথাযথ ভাবে আপনার কোম্পানীটি রেজিঃ হয়ে গেলে আপনি আরজেএসসি হতে তিনটি ডকুমেন্টস পাবেন। সেগুলো হলোঃ
১। Certificate of Incorporation.
২। Certified Copy of Memorandum of Association (MOA) and Article of Association (AOA).
৩। Form XII.নিবন্ধন সম্পন্ন হয়ে গেলে খুব সতর্কতার সহিত দেখতে হবে যে, কোন ভুল ত্রুটি রয়েছে কিনা। যদি কোনরুপ ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করতে হবে।

ভুল সংশোধনের পদ্ধতিঃ

নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার পরবর্তী ২১ দিনের মধ্যে তাহা সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করতে হবে।

ব্যাংক একাউন্ট খোলাঃ

সকল কার্যাদি সম্পন্ন হয়ে গেলে সকল কাগজপত্র সহ যে কোন ব্যাংকে কোম্পানীর নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলে ফেলতে হবে। অতপর অংশীদারগন তাহাদের পেইড আপ ক্যাপিটাল কোম্পানীর একাউন্টে ক্রস চেকের মাধ্যমে পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে ট্রান্সফার করবেন। উক্ত টাকা পরবর্তীতে কোম্পানীর স্বার্থে উত্তোলনের সুযোগ রয়েছে যা কোম্পানীর ইনভেস্ট হিসেবে বিবেচিত হবে।

মিথ্যা তথ্য ও বিবৃতি প্রদানের দন্ডঃ

যদি কোন ব্যাক্তি এই আইনের আওতায় আবশ্যকীয় বা এই আইনের কোন বিধানের উদ্দেশ্য পূরনকল্পে প্রনীত কোন রিটার্ন, প্রতিবেদন, সার্টিফিকেট, ব্যালান্স শীট, বিবরনী অথবা অন্য কোন দলিলে কোন গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে ইচ্ছাকৃত কোন তথ্য, বিবরন বা বিবৃতি দেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক পাচ বৎসর মেয়াদে কারাদন্ডে এবং তৎসহ অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত কারাদন্ড যেকোন প্রকারের হইতে পারে।


উপরোক্ত পদ্ধতিতে আপনি একটি কোম্পানী গঠন ও নিবন্ধন করতে পারবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। আপনাদের যেকোন প্রশ্ন কমেন্ট কিংবা মেসেজের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী গঠন ও নিবন্ধন পদ্ধতি ও খরচ

কোম্পানী বিষয়ে আরোও জানুন

কোম্পানী কি ও কোম্পানী গঠন বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা।


Law Article

মিথ্যা মামলা করার শাস্তি

বিভিন্ন আইনে মিথ্যা মামলা করার শাস্তি

আইনের জন্মই অপরাধ দমন ও নিরোধ করা ও অপরাধীদের শাস্তির মাধ্যমে তা কার্যকর করা। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমেই কেউ যদি কাউকে মিথ্যাভাবে শাস্তি ভোগ করাতে

আরও পড়ুন...
মামলা থাকলে সরকারী চাকরী হবে কি?

মামলা থাকলে সরকারী চাকরী হবে কি ?

বর্তমান সময়ে চাকরীতে মামলার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ও ভাবনার বিষয়। অধিকাংশ চাকরীপ্রত্যাশীর মনেই এক গভীর দুশ্চিন্তার বিষয় হল মামলা। সবার মনেই একই প্রশ্ন। মামলা থাকলে

আরও পড়ুন...