কিভাবে ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করা যায়।

কিভাবে ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করা যায়।

Table of Contents

মানুষ সবসময়ই ভ্রমনপ্রিয়। আর এই ভ্রমনের গন্ডি একসময় নিজ দেশ পেরিয়ে বিসৃত হয় বহিঃবিশ্বে। মানুষ তখন বুদ হয় বিদেশ ভ্রমনে। আর এই বিদেশ ভ্রমন যদি করা যায় নিজ গাড়ি কিংবা শখের মোটরসাইকেলে তাহলে তো কোন কথাই নেই। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে নিজের শখের মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করা যায় বা কি তার নিয়ম। আমাদের আজকের আলোচনা কিভাবে ব্যাক্তিগত গাড়ী/ মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করা যায়।

ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করতে কি কি লাগবে।

১।     ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট।

২।    ব্যাংক গ্যারান্টি।

৩।    জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমতিপত্র।

৪।    কারনেট।

৫।    ইন্সুরেন্স।

৬।    ভিসা।

৭।    ৩০০/- টাকার ইনডেমনিটি বন্ড।

৮।    ৫০০/- টাকা ট্রাভেল টেক্স।

ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিটঃ

ব্যাক্তিগত গাড়ি/ মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমন করার জন্য প্রথমেই যেই জিনিসটি লাগবে তা হলো ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট। বাংলাদেশে এই পারমিশনটি দিয়ে থাকে বাংলাদেশ অটোমোবাইল এসোসিয়েশন। ঠিকানা- ৩ বি আউটার সার্কুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা।

মোবাইল +৮৮০-১৭১১৮১৯৯৫৮-৯, +৮৮০-১৯৭৯২৯৯৭৮৬।

ফোন: +৮৮০-০২-৯৩৬১০৫৪, ওয়বেসাইট: www.aabangladesh.com।

ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে ফি লাগে ২৫০০/-। বাংলাদেশের বিআরটিএ কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ ১কপি পাসপোর্ট সাইজ ও ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি সহ সকাল ১০.০০ ঘটিকা হতে বিকাল ০৩.০০ ঘটিকার মধ্যে অফিসে নির্ধারিত ফরম পূরনের মাধ্যমে আবেদন করা যায়।

ব্যাংক গ্যারান্টিঃ

ব্যাক্তিগত গাড়ী/ মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমনের জন্য অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর গাড়ীর/ মোটরসাইকেলের সমপরিমান মুল্য কিংবা কম বেশি ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান করতে হবে। উক্ত ব্যাংক গ্যারান্টি ভ্রমন শেষে ফেরতযোগ্য।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমতিপত্রঃ

এপর্যায়ে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়্যারম্যান বরাবর ব্যাক্তিগত গাড়ী/ মোটরসাইকেল নিয়ে বিদেশ ভ্রমনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন যথাযথ হলে আপনাকে অনুমতি প্রদান করা হবে।

কারনেটঃ

বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত উক্ত অনুমতি পত্র নিয়ে আপনাকে যেতে হবে বাংলাদেশ অটোমোবাইল এসোসিয়েশনে। অতপর উনারা কারনেটের জন্য যাবতীয় কার্যাদির নিয়মাবলী জানাবেন। সাধারনত কারনেটের জন্য ১২,০০০/- (বারো হাজার) টাকা লাগে। অতপর বাংলাদেশ অটোমোবাইল এসোসিয়েশন আপনাকে একটি কারনেট বুক প্রদান করবেন।

ভ্রমনশেষে উক্ত কারনেট বুক বাংলাদেশ অটোমোবাইল এসোসিয়েশনের নিকট ফেরত প্রদান করলে তাহারা আপনার ব্যাংক গ্যারান্টি রিলিজ করে দেবে।

বর্ডারের/ ইমিগ্রেশনের কার্যপ্রনালীঃ

বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমতিপত্র, কারনেট বুক, ব্যাংক গ্যারান্টি, ভিসা, ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট সহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বর্ডারে/ ইমিগ্রেশনে গিয়ে ৩০০/- টাকার ইনডেমনিটি বন্ড ও বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমতিপত্র কমিশনারের নিকট জমা দিন। অতপর বাকি কাজ কমিশনার কার্যালয় করে দিবে।

তারপর ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে নো মেন্স ল্যান্ড এ রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে চলে যান। অতপর তার নিকট আপনার ব্যাক্তিগত গাড়ী/ মোটরসাইকের সহ কারনেট বুক জমা দিন। অতপর তিনি কারনেট বুকের সাদা অংশটি কেটে রেখে দিবেন ও কারনেট বুকে সিল ও সই দিবেন। উল্ল্যেখ্য এসকল কাজে কোথাও কোন বারতি টাকা প্রদানের প্রয়োজন নেই।

অতপর বর্ডার গেট অতিক্রম করে অপরপ্রান্ডে অবস্থানরত কাস্টমস অফিসারের নিকট আপনার কারনেট বুক জমা দিন। সেখানেও একই রকমভাবে দায়িত্বরত অফিসার কারনেট বুকে সীল ও সই প্রদান করবেন। অতপর ইমিগ্রেশনে গিয়ে আপনার যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করুন। তবে অবশ্যই সেখানে খেয়াল করবেন যে, কারনেট বুকে দায়িত্বরত কর্মকর্তার সীল ও সই রয়েছে কিনা।

কারনেট সম্পন্ন করার সময় অফিসার আপনাকে বলে দিবে যে, কারনেট সুবিধায় কত দিনের মধ্যে আপনাকে ফেরত আসতে হবে ও কি কি নিয়ম মেনে চলতে হবে। এবং নিয়ম ভঙ্গ করলে ও যথাসমেয় ফেরত না আসলে কি কি শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে তাও বলে দিবেন। সব কাজ হয়ে গেলে আপনি আপনার ব্যাক্তিগত গাড়ী/ মোটরসাইকেল নিয়ে ইচ্ছেমত ঘুড়তে পারবেন।

সতর্কতাঃ

বিদেশ ভ্রমনে সব সময় ভ্রমনরত দেশের সকল আইনের  প্রতি খেয়াল রাখা উচিত। অন্যথায় আপনাকে ভ্রমনের সাথে মামলা/ জরিমানা সবই উপভোগ করতে হবে। তাছাড়া সব সময় ছোট ব্যাগে আপনার পাসপোর্ট, গাড়ীর কাগজপত্র, অনুমতিপত্র, কারনেট সহ সকল কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে। কোথাও চেক করতে চাইলে শান্তভাবে সম্মানের সাথে দায়িত্বরত অফিসারকে কাগজপত্র দেখতে দিন। আশা করি সেক্ষেত্রে আপনিও তার কাছ থেকে ভালো ব্যাবহার পাবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

আরোও জানুনঃ

মামলা থাকলে সরকারী চাকুরী হবে কি?

মামলায় কিভাবে সাজা বা খালাষ হয়?

কোম্পানী গঠনের খরচ ও সহজ নিয়ম

চেক ডিজঅনার মামলা হলে করনীয় কি? কিভাবে পাবেন প্রতিকার

আইন বিষয়ে আরোও জানতে আমাদের ফেসবুক পেজ আইনের আশ্রয়ে মেজেস করতে পারেন।

Law Article

মিথ্যা মামলা করার শাস্তি

বিভিন্ন আইনে মিথ্যা মামলা করার শাস্তি

আইনের জন্মই অপরাধ দমন ও নিরোধ করা ও অপরাধীদের শাস্তির মাধ্যমে তা কার্যকর করা। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমেই কেউ যদি কাউকে মিথ্যাভাবে শাস্তি ভোগ করাতে

আরও পড়ুন...
সাইবার বুলিং কি এবং প্রতিকার

সাইবার বুলিং কি এবং প্রতিকার। সাইবার ক্রাইম এর শাস্তি কি। WHAT IS CYBER BULLYING AND REMEDIES.

সাইবার বুলিং কি? সাইবার বুলিং হচ্ছে একধরনের সাইবার অপরাধ। বর্তমান সময়ে এ অপরাধ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে। সাধারন অর্থে বুলিং বলতে আমরা বুঝি দুইজন মানুষের

আরও পড়ুন...
কোর্ট ম্যারিজ বা পালিয়ে বিয়ের যত কিচ্ছা কাহিনী

কোর্ট ম্যারিজ বা পালিয়ে বিয়ের যত কিচ্ছা কাহিনী

বিবাহ আমাদের সমাজে একটি পরিচিত ও আনন্দের অধ্যায়। বিবাহের মাধ্যমে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষ একত্রে বসবাস ও পরিবার গঠনের অনুমতি লাভ করে। সাধারনত, পরিবারের

আরও পড়ুন...
২০২২-২৩ বাজেটে কি কি জিনেসের দাম বাড়বে ও কমবে

২০২২-২৩ বাজেট এ কি কি জিনিসের দাম বাড়বে আর কমবে

গত ৯ জুন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। যা টাকার অঙ্কে দাড়ায়

আরও পড়ুন...